📚 বইয়ের নাম : ইস্টিশন
🍁লেখক : হুমায়ুন আহমেদ
🍁প্রকাশক : মনিরুল হক
🍁প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯
🍁প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ
🍁মূল্য : ১৬০৳
🍁পৃষ্ঠা : ৯২
🍁🍁একজন স্কুল পড়ুয়া ছেলের পারিবারিক কাহিনী নিয়েই মূলত এই উপন্যাস। এই বইটিতে একটা সুন্দর স্টেশনের বর্ণনা রয়েছে। একজন স্টেশন মাষ্টারের জীবনী আছে এই উপন্যাসে।
সব মানুষের মধ্যেই একটা নির্দিষ্ট ইস্টিশন থাকে। ইস্টিশনের সিগন্যাল ডাউন করা, সবুজ বাতি জ্বলে থাকা, আনন্দময় ট্রেনের অপেক্ষা করে বারে বারে ঘড়ি দেখা। কারো কারো ট্রেন সত্যি সত্যিই আসে আবার কারো ট্রেন আসে ঠিকই কিন্তু মেলট্রেন বলে থামে না। ঝড়ের বেগে এসে উড়ে চলে যায়।
হুমায়ুন আহমেদ ছিলেন একজন শব্দের জাদুকর। তার জাদু আমাদের উপর খুব সহজেই কাজ করে। কোনোই বা আমরা তার জাদুতে মোহিত হই! সেটা নিয়ে আমি সবসময় অবাক হই। হুমায়ুন আহমেদ এর বই এতো সহজ আর সাবলীল ভাষায় লেখা যে, ওনার বই পড়া শুরু করলে কখন যে শেষ হয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না। পড়ার পর মনে হয় কি পড়লাম শেষ ও হয়ে গেলো! আবার কয়েকদিন পর ভুলে যাওয়া ও সম্ভব।
হুমায়ুন আহমেদ আমার প্রিয় লেখকদের মধ্যে একজন। কিন্তু তার বইয়ে কিছু ওভারস্মার্ট মেয়ে থাকে যা খুবই বিরক্তিকর। যেটা এই বইয়ের কুসুম চরিত্রটা। কিছু কিছু জায়গায় প্রচন্ড বিরক্ত হয়েছি, এই চরিত্রটার জন্য বই পড়ার আনন্দটা বিঘ্ন হয়। তবুও হুমায়ুন আহমেদ তো হুমায়ুন আহমেদই। ♥️
🍁কাহিনী সংক্ষেপ : উপন্যাসের প্রধান চরিত্র টগর। সে ক্লাস সিক্সে পড়ে। তার বর্ণনানুসারেই এই উপন্যাসের চলমান প্রক্রিয়া। টগরের বাবা একজন স্টেশন মাষ্টার আর মা প্রায়ই অসুস্থ থাকেন। টগরের দুই ভাই, বড় ভাই রঞ্জু আর টগর ছোট। রঞ্জু দুইবার মেট্রিক ফেল করার পর সিদ্ধান্ত নেয় সে আর পড়াশোনা করবে না। সে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে এক পীরের প্রিয় শিষ্য হয়ে যায়। সিগারেট খাওয়া শুরু করে। তারপরও রঞ্জুর চরিত্রটা ভালো লাগে। পীরের কাছ থেকে ফিরে এসে রঞ্জু একটি এনজিওতে চাকরি নেয়।
উপন্যাসের অন্যতম এবং রহস্যময়ী আকর্ষণ হচ্ছে টগরের ফুফাতো বোন “কুসুম”। কুসুম খুবই মেধাবী একজন ছাত্রী। আর এই রহস্যময়ী কুসুমের রহস্যে আটকা পড়ে রঞ্জু এবং এক ইঞ্জিনিয়ার। এই রহস্যের প্রতি আর্কষণ টগরের ও কম ছিলো না। কুসুম একদিন টগরকে বলেছিলো তার শরীরে একটা তিল আছে সেটা তাকে দেখাবে। কুসুম আরও বলেছিলো তার যে কারো সাথে বিয়ে হতে পারে, এমনও হতে পারে টগরের সাথেও হতে পারে।
এলাকার একটি রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতুটির নাম ‘মগরা ব্রীজ’। এই ব্রীজের নামে অনেক ভৌতিক কাহিনীও আছে। সেতুটির কাজ করার জন্য ঢাকা থেকে ইঞ্জিনিয়ার সহ কিছু লোক আসে। চীন থেকে ও একজন ইঞ্জিনিয়ার আসে সবাই তাকে চীনাম্যান বলে ডাকতো। কাজের তদারকিতে সেখানকার এক ইঞ্জিনিয়ার টগরদের বাড়িতে আসা যাওয়া শুরু করে। তারপর থেকে ইঞ্জিনিয়ার কুসুমের সাথে ভাব জমাতে শুরু করে
হঠাৎ একদিন খবর এলো চীনাম্যান মগরা ব্রীজের নিচে মারা গেছেন শুধু মারা গেছেন বললে ভুল হবে তাকে খুন করা হয়েছে।
★ টগরের মায়ের কি এমন অসুখ ছিলো যার জন্য তার প্রায় অসুস্থ থাকতে হতো?
★রঞ্জু কেনো বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলো?
★এনজিওতে রঞ্জু কি কাজ করতো?
★কুসুমের এতো রহস্যময়ী হওয়ার কারণ কি?
★টগর কি দেখেছিলো কুসুমের সেই তিল?
★শেষ পর্যন্ত কি কুসুমের বিয়ে হয়েছিলো?
★মগরা ব্রীজের কি সেই ভৌতিক কাহিনী?
★কে খুন করেছে চীনাম্যানকে?
এইসব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আপনাদের অবশ্যই হুমায়ুন আহমেদ এর ইস্টিশন বইটি পড়তে হবে। টগরের মতো অনেকেরই কুসুমের সেই তিল দেখার কৌতুহল।
Leave a comment